Tuesday, 5 July 2022

জাহেদুল ইসলামের তিনটি কবিতা

জাহেদুল ইসলামের তিনটি কবিতা --

পুতুল কথা

এক যে ছিল ছোট্ট পুতুল
সাদাকালো তার সাজ,
সিল্কের কাপড় গায়ে মাথায় চুলের খাজ।

রূপকথার গ্রাম থেকে এলো ছোট্ট দুটি পরী,
পুতুলটাকে  বলল ডেকে চলো কোথাও ঘুরি।
ঘুরতে ঘুরতে পুতুল পেলো ছোট্ট দুটো ডানা,
বেশ তো মজা হলো উড়তে নেই কো মানা।
দুই পরীকে নিয়ে পাশে পুতুল তখন উড়ে,
 খেলাঘরটি শূণ্য হয়ে রইল শুধু পড়ে।।

বাধাহীন প্রেম

আমার সমস্ত প্রেমই বাধাহীন,
সেই পাহাড়ের উচু থেকে আরো উঁচু, সীমানায় উঠে দাঁড়িয়ে চিৎকার করা যাকে যায়।

নিবিড় উপলব্ধির শেষ স্তরে আমার প্রেম;
এ প্রেম দুটো‌ বিপরীত লিঙ্গের নয়,
নয় কোনো রাজবাড়ীর রাজপুত্রের সহিত।

এ প্রেম প্রকৃতির সাথে; সন্ধ্যার অস্তগামী সূর্যের, খোলা আকাশের, মিষ্টি বাতাস ,শস্য শ্যামল, মাটির গন্ধ বাধাহীন নদীর সাথে।

যে প্রেমে বয়ে যেতে পারি,
যে প্রেমের সুগন্ধ মাখা যায়,
যে প্রেমে ডানা মেলে উড়ে যাওয়া যায়।

আর এমনি এক প্রেমের সহিত
আমি আর তুমি জীবন কাটাতে চাই।।

আফসোসের জীবন--
                  
ভেবেছিলাম সরকারি চাকরি করবো,
দশটা‌ পাঁচটা অফিস করবো সীমাকে বিয়ে করবো।
সীমাকে বিয়ে করে দুজনে অনেক প্রেমে মাতব,
হলো না কিছুই হলো না... ।
দশটা পাঁচটা জীবনের স্বপ্ন, স্বপ্নই রয়ে গেলো
প্রাইভেটে কাজ করে টার্গেট এখন জয়ের স্বপ্নই‌  লক্ষ্য।
সেখানে টেনেটুনে বসের গঞ্জনায় মন এখন অসাড়,
সীমা কবেই হারিয়ে গেছে...।
সময়কালে চাকরির খবর তাকে দিতে পারেনি বলে,
 সেই, সময়কালে নিজের বিয়ের খবর দিয়ে কবেই বেপাত্তা।
যৌবন পেরিয়ে আমিও বিয়ে করলাম,
বুড়ো বয়সে এক মেয়ের বাপ ও হলাম।
পকেট বুঝে জীবন চালাই রোজ ,
বন্ধুদের সাথে পাল্লা দিতে কেবল  ডরাই,
সংসারের সমস্ত বাজার চৈত্রের সেলেই মেটাই,
মস্ত রেস্টুরেন্টে খাওয়ায় না বলে পরিবারের মুখ হাঁড়ি।
এখন বউয়ের আফসোস শুনি
"আমার মত মেয়ে পেয়েছো বলেই সব মুখ বুজে সহ্য করি"
মেয়েও আমার তাল মিলিয়ে বলে "তোমার মতই কিপটে বাবা আমার কপালে জোটে"।
আমি এসবের ভিতরে ভিতরে অট্টহাসিতে মত্ত
সরকারি চাকরি আর সীমাকে নিয়ে এখন রোজ যেন স্বপ্নে হারায়।।

No comments:

Post a Comment

দর্পণা গঙ্গোপাধ্যায়ের গুচ্ছ কবিতা --

দর্পণা গঙ্গোপাধ্যায়ের গুচ্ছ কবিতা -- চেনা চেনা চেনা মুখ আসে কালো মেঘের গায় অচেনা মানুষের ভিড়ে হারিয়ে খুঁজি তায় স্বার্থপরতা ব...