অমিত দত্ত
শুধু দু-মুঠো ভাত আমি বেশি চেয়েছিলাম বাবা।
শাড়িটা খুব ছিঁড়ে গিয়েছিল
তাই খুব আস্তে করে, নিজের কানেও ধরা দেয়নি
এমনি স্বরে একটি শাড়ি চেয়েছিলাম।
যে বইটা এনে দিয়েছিলে, তার অনেকগুলো পাতা ছিল না।
কী করব বল, পড়তে যে খুব ভালবাসতাম।
একটা পুরানো কিন্তু আস্ত বইয়ের আবদার করেছিলাম।
জানি, শীতের রাত খুব দীর্ঘ হয়,
তবু ছেঁড়া কাঁথা সেলাই করেও একটু উষ্ণতা চেয়েছিলাম,
আত্মজনের উষ্ণতা।
খুব বেশি কিছু চেয়েছিলাম?
জানি, প্রতি রাতে বিল্লুর ঠেক থেকে
টলমল শরীর যখন আমার অভাগা মায়ের শরীর খোঁজে
খুব বেশি তখন তোমার হাতে থাকে না।
ভেব না বাবা, আমি আর তোমায় জ্বালাব না।
আমি খুব ভাল আছি।
আমার এখন ভরা পেট, রকমারি শাড়ি,
ডিজাইনার গয়না, সুগন্ধে মাতানো দেহ।
টাকাগুলো পেয়ে অনেক সুবিধা হয়েছে বলো?
টালিগুলো সারিয়ে ফেল, মায়ের কাশির ওষুধটা
এবার কেনো। অনেকদিন তো কেনা হয়নি।
বিল্লুকে একটা সাইকেল কিনে দিয়ো আর…
পার তো ওইসব ছাইপাঁশ আর খেয়ো না।
তোমার মেয়ে খুব ভাল আছে, ভেবো না।
তুমি তো ভালই চেয়েছিলে? তাই না?
***লেখক পরিচিতি ঃ লেখক অমিত দত্ত উত্তর চব্বিশ পরগনা নিবাসী। উনি পেশায় শিক্ষক। দীর্ঘকাল উনি লেখালাখির সাথে যুক্ত। অনেক বছর ধরেই বহু পত্র পত্রিকায় ওনার লেখা নিয়মিত ভাবে প্রকাশিত হয়ে আসছে। অনলাইন এবং প্রিন্টেড, উভয় প্রকার পত্রিকাতেই লেখক অমিত দত্তের গল্প, কবিতা, অণুগল্প প্রকাশিত হয়েছে এবং হচ্ছে। বাংলাদেশেও ওনার লেখা বেশ কয়েকবার প্রকাশিত হয়েছে। ‘ভবিষ্যৎ’, ‘মহুয়া’, ‘সাম্য’, ‘এবং বৃত্তের বাইরে’, ‘বর্ণালোক’, ‘শব্দসাঁকো’ ইত্যাদি বহু পত্রিকায় ওনার লেখা নিয়মিত প্রকাশ হয়ে আসছে। বিভিন্ন প্রতিযোগিতাতেও ওনার লেখা স্থান করে নিয়েছে। বেশ কিছু সাহিত্য সম্মানও লেখক লাভ করেছেন এ পর্যন্ত।
No comments:
Post a Comment