*শেষ খেয়ার ভাবনা*
--------------------------------
হায় রে! পৃথিবী এ সংসারে
কেহ যে কারো নয়,
স্বার্থের লাগি ছায়া সঙ্গী সবাই
স্বজন স্ত্রী -কন্যা -তনয়।
স্নেহ মায়া মমতার বন্ধনে
সবাই হারিয়ে ফেলে নিজেকে,
এমনি সময় আসে, দূরে যায় সব
নিজেকে শুধায় সবাই, আমি কার কে?
সময়ের তালে চলে জগৎ - সংসার,
মিথ্যা আবেগের স্রোতে,
কেন যে,লভিনু এ জনম
বসে ভাবে শেষ খেয়াতে।।
*ফিরে দেখা দণ্ডকারণ্য*
-------------------------------------
ফিরে দেখি ফেলে আসা দন্ডকবন,
স্মৃতি গুলো পিছু ডাকে অনুক্ষণ।
পাহাড় -সবুজে ঘেরা ছিলো বনানী,
নিঃসঙ্গ পাহাড় এখন দাঁড়িয়ে একাকী।
সারাটাদিন ছিলো পাখিদের কলতান,
সন্ধ্যায় অদূরে বনবাসীর মাদলের তান।
ছিলো না আধুনিকতা ;ছিলো না অট্টালিকা,
মনের আনন্দে থাকতো সবাই
ছিলো না কেউ; কখনো একা।
স্নেহ ভালোবাসার বন্ধন ছিলো
ছিলো মনের আন্তরিকতা,
থাকতো সবাই বন্ধু - স্বজন হয়ে
ছিলো না কোন মলিনতা।
ফিরে দেখি ফেলে আসা দিনগুলো
চোখে যেন ভাসে,
স্মৃতি গুলো ঝাপসা হয়ে আছে শুধু
নিঃসঙ্গ মনের ক্যানভাসে।।
*পুত্রের পরশ*
---------------------
ছেলে আমার উচ্চ শিক্ষিত
এম,এন,সির বড়ো ইঞ্জিনিয়ার,
স্বাধীনচেতা স্বাধীন ভাবনা
বাবা -মা কে কার।
বাবা-মায়ের ইচ্ছে গুলো
পুত্রের মিথ্যা আবেগে ভেসে যায়,
বাবা -মায়ের স্বপ্ন গুলো
মরীচি কার পিছু ধায়।
স্বপ্ন গুলো স্বপ্নই থাকে
মনের ক্ষত এগিয়ে যায়,
এমনি ভাবে জীবন তরী
শেষের খেয়ায় পাড়ি দেয়।
ক্লান্ত হৃদয় ক্লান্ত কায়ায়
পিতার ক্ষুধা তৃষ্ণা দূরে যায়,
চোখের পাতা একহয় না
রাত কেটে যায় বিনিদ্রায়।
পুত্রের রেখে য়াওয়া জামা গেঞ্জি
বিছানা চাদর মাথার বলিশ,
পিতার কাছে এগুলো যেন
বাবার বুকের ব্যাথার দামী মালিশ।
খোকার রেখে যাওয়া জিনিস গুলো
মনে হয় খোকা আছে বাবার সাথে,
খোকার বালিশ জড়িয়ে ধরে
তাই তো বাবার ঘুম আসে।
খোকার গেঞ্জি বাবার গায়ে
তাকিয়ে থাকে ছাদের পানে,
বাবা ভাবে এই তো খোকা
জড়িয়ে আছে আমার প্রাণে।
এয়ার টিকিট টা আটকে রাখে
ক্যালেন্ডারের ছুটির পাতায়,
রোজ সকালে দিন গোনে
খোকা বাড়ি ফিরবে আবার পূজায়।
সব কিছুতেই খোকার পরশ
পরম স্নেহে হাত বুলায়,
খোকা যে এখন স্বাধীনচেতা
গড়বে জীবন নিজের ভাবনায়।।
No comments:
Post a Comment