(১) জীবনের সাথে সমঝোতা করে নিন
আপনি যদি ষাটটি বসন্ত পার করে থাকেন
তবে আপনাকে অভিনন্দন জানাই ।
আপনার পরবর্তী জীবন আনন্দেই কাটবে
বলে আমার বিশ্বাস ।
আপনার সন্তান সন্ততিদের সাথে
সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলুন ,
বিনিময়ে তাদের থেকে কিছু পাওয়ার
আশা কখনোই রাখবেন না ।
ছোটরা আগ্রহী থাকলে তবেই কোন বিষয়ে
তাদের সুপরামর্শ দিন ,
আপনার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা লব্ধ জ্ঞান অযথা
বিতরণ করে তাদের বিরক্ত করবেন না ।
নিজের কাজ যথাসম্ভব নিজে করে নেওয়ার
অভ্যাস তৈরি করুন ,
কখনোই অন্যদের কাজে হস্তক্ষেপ করবেন না
বা কোন বিষয়ে নাক গলাবেন না ।
যথাসম্ভব কম কথা বলার অভ্যাস তৈরি করুন,
অন্যদের কথা বোঝার চেষ্টা করুন ।
নিজের অবস্থায় খুশি থাকায় চেষ্টা করুন,
বন্ধুদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখুন ।
ছোটখাট বিষয়ে অভিযোগ করবেন না
যা পাচ্ছেন তাই নিয়ে খুশি থাকুন ,
কে আগে কে পরে যাবে সেটা ভুলে
একা জীবন কাটানোর অভ্যাস করুন ।
খালি হাতেই চলে যেতে হবে ,তাই
অধিকার বজায় রাখার চেষ্টা করবেন না ।
মনের দুঃখ বেদনা লুকিয়ে রেখে
জীবনের সাথে সমঝোতা করে নিন ।
(২) জীবনের সত্য
সময় এগিয়ে চলেছে, কিন্তু কেমন ভাবে ?
বোঝাই গেল না অস্থির জীবন্যাত্রায়
কখন আমাদের বয়স টা বেড়ে গেল ।
কোলে পিঠে চড়া বাচ্চাগুলো কখন
যে আমাদের কাঁধ বরাবর পৌচেছে ;
তার হিসাবই রাখা গেল না ।
ভাড়া ঘরে জীবন শুরু করে কখন
যে নিজেদের বাড়িতে পৌঁছে গেছি ;
সেটা বুঝতেই পারলাম না ।
সাইকেলে হাফ প্যাডেল করতে করতে
কখন যে বাইকে সওয়ার হয়ে গেছি ;
কেই বা তার হিসাব রেখেছে ।
মা বাবার উপর নির্ভরশীল থাকতে থাকতে
কখন যে স্ত্রী সন্তানের দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছি ;
তার হিসাব রাখা বেশ কঠিন ।
সুন্দর কালো চুলে চিরুনি চালাতে চালাতে
কখন যে মাথার চুলগুলো সাদা হয়ে গেছে ;
নিজেও তার খবর রাখি নি ।
হন্যে হয়ে চাকরী খুঁজতে খুঁজতে কখন
যে অবসরের বয়স এসে গেছে ;
তার খেয়াল রাখা হয়নি ।
বাচ্চাদের জন্য পয়সা কামাতে কামাতে
কখন সে বাচ্চারাই কামাতে শুরু করেছে ;
আজ আর তা মনে পড়ে না ।
বিশাল পরিবারে দাদু দিদা, কাকা পিসির
ভাই বোনের সাথে হেসে খেলে বড় হয়েছি ;
আজ কে কোথায় , কে তার খবর রাখে ?
নিজের লোকেদের জন্য কিছু করার কথা
ভাবতে শুরু করলে শরীর সাথ দেবেনা ;
জীবনের এই সত্যটাকে ভাবতেও পারি নি ।
( ৩ ) মাদকতা
পান করার পরে পাটা টলে যায়
কিছুটা মাতলামিও দেখা যায় ;
পানশালাতে যারা সময় কাটায়
তাদেরকেই মদ্যপায়ী বলা যায় ।
তাদের কি এমন দুঃখকষ্ট থাকে
কেন তারা সহজ পথে চলে না ?
একটু মনখারাপ হলেই মদ্যপান
কেনই বা এমন মতি হয় জানিনা ।
অভ্যাসের বসেই মদ্য পান করে
বরবাদ হওয়ার পথে পা বাড়ায়;
মদ্যপান করার জন্যই যে তারা
রোজই নতুন বাহানা খুঁজে পায় ।
দিনের বেলা হোক কিংবা রজনী
মদ্যপানের জন্য সর্বদাই তৈয়ার ;
বিয়ে হোক বা অন্য কোন উৎসব
মদ্যপানের উপলক্ষ্য চাই কি আর ।
পানশালা হল এমন এক জায়গা
যেখানে রামও যায় রহিমও যায় ;
সেখানে জাতি ধর্ম সব একাকার
মদিরাতে সবাই তো আনন্দ পায় ।
এক পাত্র মদিরা অমৃতের সমান
সকলেই যে মদিরা মন্ত্র জপ করে
নিজের করুন অবস্থাটা তুলে ধরে
মদ্যপানের অজুহাতটা খুঁজে মরে।
এমন মাদকাসক্ত অবস্থার মধ্যেও
মাতালরা দরকারী কাজ চালায় ;
মদিরা পান করতে করতেই তারা
জীবনের তরী ভাসিয়ে নিয়ে যায় ।
সব জ্ঞানীগুনিরা সঠিক বার্তা দেয়
জ্ঞানগর্ভ কথাও বলে থাকে সবে;
- মদিরা পান করা থেকে দূরে থাক
পানশালার কাছ সর্বদাই দূরে রবে ।
-----------------------------------------
রচনা - অসিত কুমার পাল
No comments:
Post a Comment