মিস্টার ক্রোধের ফ্যামিলী--
খোঁজ নিয়েছেন ওনারা আছেন কেমন
আপনার প্রতিবেশী তো ওনারা,পাশেই তো থাকেন
মিস্টার ক্রোধ,পুরো ফ্যামিলী নিয়ে বাস করেন,
ওনার স্ত্রী হলেন জেদ,,সমস্যা অনেক,
একটি কন্যা, সমালোচনা ও একটি পুত্র স্বার্থ
ভাবুন মশাই মিস্টার ক্রোধ,কিভাবে সব সামলান!
আসলে পিতা তো হলেন মিস্টার অহঙ্কার,
মাতা হচ্ছেন ভয়ঙ্কর ঘৃণা, ভ্রাতা হলেন লোকসান
যারপরনাই নিজেও ক্রোধ হয়ে জন্মেছেন
আদরের বোনটি হিংসা!!
হিংসা আর সমালোচনা বড্ড মিল পিসি ভাইজীতে,
তবুও মাঝে মধ্যেই হয় ফাটা ফাটি,,
ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন মিস্টার ক্রোধ,ফ্যামিলীর ঝামেলায়
ডিসিপ্লিন থাকছেই না,মেজাজ যাচ্ছে চড়ে,
মিস্টার ক্রোধ মাঝে মাঝেই হয়ে পড়ছেন অসুস্থ
প্রেসার সুগার যাচ্ছে বেড়ে!!
ওদিকে স্ত্রীটি কন্ট্রোলে থাকে না,যা বলবে সেটাই হবে
কারো কথাই শুনবে না,
প্রায় দিনই মতানৈক্য, কথা বলতেই ইচ্ছে করে না
বাবার আবার বড্ড দাপট, সারাজীবন চলেছেন মাথা তুলে
এখন এই বয়সে, আছেন গোঁফ উঁচিয়ে!!
ভাইটা তো মহা বজ্জাত একটা,ছোটো থেকে আস্কারা পেয়েছে
বাবার টাকা ধ্বংস করেও হয়নি, শ্বশুরকেও ডুবিয়েছে
সেই জন্য বৌটি তার ডিভোর্স দিয়ে গেছে,
কেঁদে কেটে বললে দাদা,আরেকটা সুযোগ দাও
দিলেন ওকে হোটেল করে,খেয়ে, বন্ধু বান্ধব খাইয়ে
সবই গেলো লসের খাতায়!!
এই সব দেখে মাথা কি ঠিক থাকে কখনো,
ক্রোধে ফেটে অসুস্থ হয়ে পড়েন, মাঝে মাঝে!!
কন্যাটিও কম যায়না, শুধুই পি এন পিসি,
পারেননি বিয়ে দিতে, সবেতেই খুঁত ধরে বেশি,
ছেলে তো আরেকজন,ওই মায়েরই তো ছেলে
নিজেরটা বোঝে ষোলোআনা,কারো কথা ভাবতে জানে না
বোনের কথা মশাই কি যে বলি, কারো ভালো দেখতে পারে না
মনে জ্বলন বেশি, শ্বশুর বাড়িতে একটুও নয় খুশি,
মা ওনার দেবীর মতো, অভিমানটা সামান্য বেশি
অনেক বুঝিয়ে ক্লান্ত হয়ে মুখ ঘুরিয়েছেন সকলের থেকে
সকলকেই ঘৃণা করেন অনেকটাই বেশি!!
আমি মশাই থাকি পাশের বাড়ি, শুনি কানাঘুষা
দূরেই থাকি, বেশি যোগাযোগ রাখি না,
এমন ফ্যামিলী হয় যদি প্রতিবেশী,দূরে থাকাই ভালো
কখন কোন ঝামেলায় জড়িয়ে হবে মহা কেলো।।
নদীর পাড়ের কান্না
বৃষ্টি এলো বৃষ্টি এলো,ভালোই লাগে আজ
গরম কেটে শান্ত হলো মেঘ রৌদ্রের সাজ
শুনছি কোথাও জলের তোড়ে হড়পা বান নামে
নদীর পাড়ে বাড়ি ঘরে প্রমাদ গুনি মনে
বাড়ছে জল ফুঁসছে নদী, গর্জন ভয়ঙ্কর
হঠাৎ দেখি পাড় ভেঙেছে, শুনছি হাহাকার
বাড়িঘর গেলো চলে,গরুও ভেসে চলে
রাতে নদী ভয়ঙ্কর, হিসেব নাহি মেলে
পায়না খুঁজে রফিক মিঞা সাধের গরু দুটি
বাঁধা ছিল নদীর ধারে গোয়াল ঘরে খুঁটি
রাত দুপুরে গরু চেঁচায় হাম্বা হাম্বা করে
আমিনা ছোটে গোয়াল ঘরে,গরু দুটোর কাছে
পাগল গরু লাফালাফি,আমিনা দড়ি খুলেছে
অমনি পাড় ভাঙলো নদীর সবই তলিয়ে গেলো
একটি মাত্র মেয়ে চাচার, আর গরু দুটি ছিল
সংসারে আর কেউ নাই, ভাসছে জলে চোখ দুটি
জলে ফোঁসা নদীর বুকে ভেসেছে সংসারটি
কিসের আশায় বাঁচবে চাচা,খাবেই বা আজ কি
গরুর দুধে চলতো সংসার, হতো ক্ষেতে শাক সবজিটি
বাপ মেয়েতে মিলেমিশে,চলতো হেসেখেলে
আজকে সংসার শূণ্য তার নদীই সব খেলে
মনের দুঃখে রাস্তা ধারে করছে চাচা ভিক্ষা
নদীকে ভালোবেসে পাশে থাকার পেয়েছে চাচা শিক্ষা
নদীর বুকের টাটকা মাছ আমিনা বড়োই ভালোবাসতো
ঝালে ঝোলে মশলা দিয়ে যত্ন করে রাঁধতো
পড়ছে মনে কতোই কথা,রফিক মিঞার থেকে থেকে
সব হারিয়ে রফিক মিঞা,আজ বোবা হয়ে থাকে।।
তীর্থ করতে হবে
মানুষ ভাবে ধম্মো করবে
যাবে তীর্থ করতে
সামান্য ঐ লোটা কম্বল
সঙ্গে নিয়ে সাথে!
সাধের গয়া,কাশী, বৃন্দাবন
ভাবছি যেতে হবে
পুণ্য কিছু কামাতে হবে
আছে যতোক্ষন ভবে!
ডায়া বায়া রোজগার
সুখ তো ছিল ভালো
এখন কেনো মনের মধ্যে
ঘুটুর ঘুটুর হলো!
হাত দুটো কাঁপছে কেনো
ডক্টর বলে নার্ভের রোগ
আমি ভাবি সত্যিই কি
ছিল তো কতো অভিযোগ!
ভাবছি যাবো গঙ্গাসাগর
দেবো না ওটাও বাদ
সব পাপিরাই যায় জানি
বাঁচার বড়ো সাধ!
এক ডুবে করবো পুণ্য
বলছি চলো, স্ত্রীকে
আমার টাকায় সুখ ভোগ
এখন শান্ত করি মনটিকে!
ঘটা করে করি পূজো
মস্ত ঠাকুর ঘর
দু-বেলা মন্ত্র পূজা
লাগছে মনে ডর!
হচ্ছে বয়স,তাই বলেকি
হবে হজমে সমস্যা
টাকার পাহড়ে থাকি বসে
খাচ্ছি মুড়ি,শশা!
আমার টাকায় ফুর্তি করে
ল্যাজ , মাথা মানুষেরা
আমি শুধু টাকা গুনি
রোগ যে করে তাড়া!
অনেক ভেবে ঠিক করেছি
তীর্থ ধম্মো করি তবে
তবে যদি পাপ ধোয়
পুণ্য জমা হবে।।
***লেখক পরিচিতি --আমি স্বপ্না মজুমদার। আগে পশ্চিমবাংলার বর্ধমান জেলার দুর্গাপুর শহরে থাকতাম। ওখানেই আমার জন্ম ও শিক্ষা।বর্তমানে পুণা (মহারাষ্ট্র)এ থাকি। ছোটোবেলা থেকে বাংলা সাহিত্যের প্রতি অনুরাগ ছিল।বাবা ঈশ্বর নির্মল কান্তি দাম কবিতা লিখতেন। তাঁর প্রেরনায় উদ্বুদ্ধ হই। মা গৃহবধু। আমার নিজস্ব দুটি কাব্য গ্ৰন্থ আছে।স্বপ্নের কবিতা ও শিশুতোষ কাব্য ভোরের মুকুল।এছাড়াও বহু পত্রিকায় আমি লেখালেখি করেছি এবং বর্তমানেও করি।অবসরে গীটার বাজাতে ভালোবাসি।
No comments:
Post a Comment